রংপুরে ৫৬ দিনব্যাপী শিক্ষকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু ২০ ডিসেম্বর: বাংলা ও গণিত শিক্ষকদের অগ্রাধিকার
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর:
মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিখন-শেখানো কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে রংপুর বিভাগে শিক্ষকদের জন্য ৫৬ দিনব্যাপী আবাসিক বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (লেইস)’ প্রকল্পের আওতায় সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি), রংপুরে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হতে যাওয়া এই প্রশিক্ষণে রংপুর বিভাগের ৮টি জেলা থেকে মোট ১২০ জন শিক্ষক অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
৩ ডিসেম্বর রংপুর টিটিসি’র অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আমজাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। চিঠিতে বিভাগের সকল জেলা শিক্ষা অফিসারদের আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনীত শিক্ষকদের তালিকা প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের হাতে-কলমে ও ফলপ্রসূ শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনা এবং আধুনিক ক্লাসরুমের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় উপযোগী করে গড়ে তোলাই এই প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য। যেহেতু এটি একটি পূর্ণকালীন আবাসিক প্রশিক্ষণ, তাই প্রশিক্ষণকালীন সময়ে বি.এড বা এম.এড বা অন্য কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মনোনয়ন না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক নির্বাচনের মানদণ্ড ও অগ্রাধিকার প্রশিক্ষণার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছু কড়া শর্ত ও মানদণ্ড নির্ধারণ করে দিয়েছে টিটিসি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
বয়সসীমা: মনোনীত শিক্ষকের বয়স ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে অবশ্যই ৪০ বছরের নিচে হতে হবে। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বিষয়ভিত্তিক অগ্রাধিকার: বাংলা ও গণিত বিষয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। শরীরচর্চা শিক্ষকরা সুযোগ পেলেও লাইব্রেরিয়ান বা সহকারী লাইব্রেরিয়ানরা এই ব্যাচে সুযোগ পাবেন না।
প্রতিষ্ঠান ও লিঙ্গ অনুপাত: প্রতি ব্যাচে বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার অনুপাত হবে ২:১ এবং পুরুষ ও নারী শিক্ষকের অনুপাত হবে ৭:৩।
এনটিআরসিএ (NTRCA): এনটিআরসিএ-এর সর্বশেষ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগকৃত শিক্ষকরা এই ব্যাচে মনোনয়ন পাবেন না, তারা পরবর্তীতে সুযোগ পাবেন।
জেলাভিত্তিক কোটা বণ্টন রংপুর বিভাগের ৮টি জেলা (রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও পঞ্চগড়) থেকে সমহারে শিক্ষক নেওয়া হবে। প্রতিটি জেলা থেকে ১০ জন স্কুল শিক্ষক এবং ৫ জন মাদ্রাসা শিক্ষকসহ মোট ১৫ জন করে শিক্ষক মনোনীত হবেন। এভাবে ৮ জেলায় মোট ১২০ জন শিক্ষক এই ব্যাচে অংশ নেবেন।
জরুরি নির্দেশনা প্রশিক্ষণটি ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকায়, জেলা শিক্ষা অফিসারদের আগামী ৮ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে ইমেইলের মাধ্যমে নির্ধারিত ছকে তালিকা প্রেরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। আবাসন ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে নারী প্রশিক্ষণার্থীদের শিশু সন্তানসহ অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান পরিবর্তনে এই দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।